সরকার দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম বন্ধ করেনি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বাস্তবতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এক সাংবাদিক গণহত্যার পক্ষ নিয়ে প্রশ্ন করার প্রেক্ষিতে দীপ্ত টিভির সংবাদ বিভাগ নিজেরাই সংবাদ সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার এখানে কিছু বলেনি, কাউকে কলও দেওয়া হয়নি।
অপরদিকে একই অনুষ্ঠানের বরাত দিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ জানিয়েছেন, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার দীপ্ত টিভির সংবাদ কার্যক্রম বন্ধ করেনি। এটি দীপ্ত টিভি-কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত।
অনুষ্ঠানে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘মন্ত্রিত্বের ৬ মাসে কাউকে আমরা কল দেইনি। দীপ্ত টিভির সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং সংবাদ বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে। এখন মানুষ ভাববে, এটা সরকার করেছে।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি গত বছরের জানুয়ারিতে একটি টিভি চ্যানেলে চাকরির জন্য গিয়েছিলাম। আমাকে ১৩ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছিল। এই টাকায় ঢাকা শহরে একজন মানুষ চলবে কীভাবে, পরিবারকে কী দেবে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল বেলা সোয়া ৩টায় দীপ্ত টিভির স্ক্রলে জানানো হয়, ‘অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সব সংবাদ পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত।’ একই সঙ্গে বেসরকারি টিভি চ্যানেল দীপ্ত টিভির সংবাদ সম্প্রচার সাময়িক স্থগিত রয়েছে। পৃথক এসব ঘটনা স্বাধীন গণমাধ্যমে জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার দীপ্ত টিভির এক স্ক্রলে বলা হয়— ‘অনিবার্য কারণবশত দীপ্ত টিভির সকল সংবাদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলো।’ একইসঙ্গে দীপ্ত টিভির একজন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা জানা যায়নি।
সূত্র বলছে, সম্প্রতি এক সংবাদ প্রতিবেদনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর কাছে ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ১৪০০ শহীদ’ সংক্রান্ত বিতর্কিত প্রশ্নের জের ধরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই ঘটনার জেরে চ্যানেল আইয়ের আরেক সংবাদকর্মীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরে চ্যানেলটির অফিসিয়াল পেজে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়— ‘সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে পেশাদারিত্ব প্রদর্শন না করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিষয়ে চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষের তদন্ত শুরু ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।’
এদিকে এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি মো. ফজলে রাব্বিকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান সই করা অব্যাহতির চিঠিতে বলা হয়— আপনি রিপোটিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ পেশাগত দায়িত্ব পালন না করায় আপনাকে ২৯ এপ্রিল থেকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।